কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা - আমলকির ক্ষতিকর দিক গুলো

প্রিয় পাঠক, আসসালামুয়ালাইকুম আপনি যদি কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাইলে আপনি ঠিক জায়গায় প্রবেশ করেছেন। আজকে আমি আপনাদের কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও আমলকির ক্ষতিকারক দিক সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।

আমলকি শুধু ভিটামিন সি এর উৎসাহ নয়। আমলকিতে রয়েছে অনেক গুণ। তাই আমলকি খাওয়ার আগে ভালো করে জেনে রাখুন আমলকিকে কেন উপকারী বন্ধু বলা হয়। সাধারণত আমলকিকে আপনারা দুই ভাবে খেতে পারেন চিবিয়ে ও রস করে। তবে যেভাবে খান উপকার পাবেন দুটি পদ্ধতিতেই।

আমলকি খাওয়ার সঠিক সময

আমলকি খাওয়ার আগে আপনাকে সর্বপ্রথম আমলকি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। কারণ
কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা যেমন রয়েছে। তেমনি আমলকির ক্ষতিকারক ঠিক সমূহ অনেক রয়েছে। আমলকিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা আপনাকে অনেক রোগসমূহ থেকে বাঁচাতে পারে।

কিন্তু অতিরিক্ত আমলকি খাওয়ার পরে হতে পারে ভয়ানক কিছু । তাইলে চলেন জেনে নেওয়া যাক আমলকি কোন নিয়মে খাওয়া উচিত।

আপনি যদি প্রতিদিন সকালে কাঁচা আমলকি দুই থেকে তিনটি করে খেতে পারেন তাহলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। তবে একদিনে দুই থেকে তিনটির বেশি আমলকি খাওয়া ঠিক নয়। কাঁচা আমলকিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে।

কাঁচা আমলকি আমাদের লিভার ভালো রাখার পাশাপাশি আমাদের শরীরের ব্লাড প্রেসার এর মাত্রা সঠিক নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। কাঁচা আমলকি আমাদের বয়সবৃদ্ধি রোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।

কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক বেশি। আমাদের শ্বাসযন্ত্র ও ফুসফুস ভালো রাখতে নিয়মিত আমলকি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই অন্তত প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি করে আমলকি খাওয়া প্রতিটা মানুষের জন্য প্রয়োজন।

কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

  • কাঁচা আমলকি চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে থাকে। আমলকি চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করে। এটি চুলের পরিচর্যার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
  • কাঁচা আমলকিতে এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান বেশি থাকায় শরীরের ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে অনেক সাহায্য করে। তাই কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা অনেক।
  • কাঁচা আমলকির রস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে থাকে ।কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের মত সমস্যা দূরীকরণে এর ভূমিকা অনেক। এছাড়াও আমলকি পেটের বদ হজম রুখতে ভূমিকা রাখে।
  • শরীরের অপ্রয়োজনীয় চর্বি জড়াতে আমলকির গুরুত্ব অনেক ।এটি শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতেও সাহায্য করে।
  • প্রতিদিন ভোরে আমলকির রস মধুর সাথে মিশিয়ে খাইলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি হয়ে যাবে। এবং ত্বকের কালো দাগ দূরীকরণে কাঁচা আমলকির গুরুত্ব অনেক।
  • আমলকি শরীরের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। কাঁচের লোকের রস শরীরকে ঠান্ডা রেখে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও বেশি মজবুত করতে সাহায্য করে।
  • কাঁচা আমলকির রস মানব দেহের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। আমলকি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার জন্য অনেক উপকারী। এবং এজমা রোগীদের জন্য আমলকির জুস অনেক উপকারি।
  • কাঁচা আমলকির রস ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক ভূমিকা রাখে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
  • সর্দি কাশি ও পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণে আমলকির রস অনেক ভালো কাজ করে দেয়। বমি ব্যথা যন্ত্রণায় আমলকি অনেক উপকারিতা উপাদান।
এছাড়া আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ রোগের প্রতিরোধক হিসাবে আমলকির রস অনেক উপকার করে থাকে। কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা বহু। এটি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। এবং মুখের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও আমলকির ক্ষতিকর দিক রয়েছে অনেক।

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

ঠাণ্ডা ও গলা ব্যথা দূর করতে : খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। কাঁচা আমলকিতে রয়েছে সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধ করার বিশেষ উপাদান। যা মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আমলকির সাথে একটু আদা ও এক ফোঁটা মধু মিশিয়ে খাওয়া গেলে ঠান্ডা ও গলা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে: আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে এমিনো এসিড রয়েছে। হজম শক্তি বৃদ্ধি ও দেহে ফ্যাট জাতীয় পদার্থ জমতে দেয় না। প্রতিদিন খাওয়ার পরে আমলকির পানি খাইলে এই উপকারটি পেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগের জন্য: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই ফল অনেক উপকারি একটি ফল। এই ফলে ক্রমিয়াম রক্তে চিনির অতিরিক্ত মাত্রা কমিয়ে দেয়। এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে: আমলকিতে আঁশ সমৃদ্ধ পরিপাকতন্ত্রকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আমলকি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে দেহ থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করা দেয়।

ত্বকের ব্রণ নিয়ন্ত্রণ: কাঁচা আমলকির রস ত্বকের ব্রণ ও ফোড়া প্রতিরোধ। আমলকি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। আমলকি খেলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না। তাই কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা বহুমাত্রিক।

আমলকির ক্ষতিকর দিক

কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা যেমন অনেক ,তেমনি আমলকির ক্ষতিকার দিক ও রয়েছে। হজম ক্ষমতা ভালো রাখার জন্য যেমন আমলকি খাওয়াটা অনেক উপকারী তেমনি প্রয়োজনের বেশি আমলকি খাইলে ডায়রিয়া, পেট ফোলা, বদহজম ,ও এসিডেটির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

আমলকিতে অনেক পরিমাণে অক্সলেট আছে। যার ফলে পরিমাণের বেশি আমলকি খেলে কিডনিতে পাথর বাড়তে পারে। তাই পরিমাণের চেয়ে বেশি আমলকি বা আমলকির রস কোনটাই খাওয়া উচিত হবে না।

মানব দেহে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক জরুরী। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে শরীরে হৃদরোগের বাসা বাঁধতে পারে। যাদের হাই প্রেসার ব্লাড প্রেসার রক্তচাপের মাত্রা বেশি। তাদের কাঁচা আমলকির রস না খাওয়াই ভালো।

অতিরিক্ত আমলকি দাঁতের অম্ল ভাব এনিমেলের ক্ষয় ঘটাতে সক্ষম। ফলে দাঁতের অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমলকির রস খেয়ে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে দুই তিনবার কুলি করে নিন ।তাছাড়াও আপনি শুকনো আমলকি সেবন করতে পারেন।

রাতে আমলকি খেলে কি হয়

বিশেষ করে রাতে আমলকি খাওয়া একেবারে ঠিক নয়। আমলকিতে প্রাকৃতিকভাবে এসিডিটি রয়েছে । সাধারণত রাতে আমাদের পেট খালি থাকে আর খালি পেটে যদি আমলকি খাওয়া হয় তাইলে পেটের বিভিন্ন রকমের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই রাতে কখনও খালি পেটে আমলকি খাওয়া একেবারে ঠিক নয়।

লেখক এর মন্তব্য

আসলে আমাদের সুস্থ থাকার জন্য বেশি কিছু প্রয়োজন হয় না। নিয়মিত সবকিছু পরিমাণ মতো খাওয়ার মাধ্যমে আমরা পুরোপুরি সুস্থ থাকতে পারি। তাই সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য নিয়মিত পড়ে ও পরিমান মত খাবার খায়লে আমরা সুস্থ ভাবে বেচে থাকতে পারবো। প্রিয় পাঠক আমাদরে সাথেই থাকুন আর নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় সম্পকে জানতে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url